বেগুন খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা। Benefits and harms of eating eggplant.

বেগুনকে আমরা সবজি হিসেবে পেয়ে থাকি। বেগুন একটি শীতকালীন সবজি। শীতকালীন সবজি হলেও প্রায় সারা বছরই বেগুন পাওয়া যায়। একটি সহজলভ্য সবজি।  বেগুন খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা। Benefits and harms of eating eggplant.

বেগুন বিভিন্ন রঙের হতে পারে, কালো সবুজ বা লাল। বেগুন সম্পর্কে একটা চলতি কথা আছে। কথাটি হল “কোন গুণ নেই, যার সেই বেগুন”। কথাটা কিন্তু মোটেও সত্যি নয়। সবজির হিসেবে বেগুনের মধ্যে গুণের শেষ নাই। বেগুনিটি ভীষণ উপকারী একটি সবজি।

বেগুন খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা। Benefits and harms of eating eggplant.

000000000000000000

এবার জেনে নেব বেগুনের মধ্যে কি কি পুষ্টি গুন আছে? 

গুগোল বেগুন খেলে কি হয়?

বেগুনের পুষ্টিগুণ:

  • প্রোটিন 
  • ক্যালরি 
  • ম্যাঙ্গানিজ 
  • কপার 
  • ফোলেট 
  • পটাশিয়াম 
  • কার্বোহাইড্রেট 
  • ভিটামিন এ 
  • ভিটামিন ই
  • ভিটামিন বি ৬ 
  • ভিটামিন কে 
  • ভিটামিন সি 
  • থায়ামিন 
  • ম্যাঙ্গানিজ 
  • আয়রন 
  • ফসফরাস 
  • ফাইবার 
  • ফলিক অ্যাসিড  
  • ম্যাগনেসিয়াম
  • জিংক

এবার আমরা জেনে নেব বেগুলার মধ্যে কি কি উপকারিতা আছে? বেগুনের উপকারিতা কি কি?

বেগুনের উপকারিতা:

১. বেগুন হৃদ রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

বেগুন হৃদ রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। কাঁচা বা ভাজা বেগুন খাওয়া হার্টের কার্যকারিতা ভালো রাখে ও হার্ট অ্যাটাকের সমস্যা রাজ করে। বেগুনে আছে ভালো কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কম করতে পারে।

২. বেগুন খেলে কি ক্যান্সার হয়?

বেগুন খেলে কি ক্যান্সার হয়? বেগুন ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। বেগুনের মধ্যে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা ক্যান্সারের সম্ভাবনা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়তে পারে। বেগুন খাওয়ার সুবিধা হল আপনার অঙ্গগুলিকে সুরক্ষিত রাখেতে তা সাহায্য করে।

৩. বেগুন হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

বেগুন খেলে আমাদের হজম শক্তির বৃদ্ধি হয়। কেননা বেগুনের মধ্যে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। যা পরিপাকতন্ত্রের মধ্যে দিয়ে যায়। ফাইবার হজম শক্তিকে বাড়াতে সাহায্য করে। এবং চিনিকে অর্থাৎ শর্করাকে শোষণ করে ধীরে ধীরে রক্তের মধ্যে থাকা শর্করার পরিমাণ কমিয়ে দিতে পারে। বেগুন খাবার ইনসুলিনের পরিমাণ নিঃসরণ বাড়াতে পারে এবং রক্তের মধ্যে শর্করা কমাতে সাহায্য করে।

৪. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে বেগুন।

বেগুন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে বিশ্বের বহু মানুষের মৃত্যু হয় উচ্চ রক্তচাপের কারণে। সেই উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এই বেগুন।

৫. ওজন কমাতে সাহায্য করে বেগুন।

দেখুন ওজন কমাতে সাহায্য করে। কেননা বেগুনের মধ্যে আছে ফাইবার। যা শরীরে খিদে কম করতে সাহায্য করে। এর ফলে আমাদের ওজনও কম হয়। তাই যারা ডায়েট আছেন। তাদের ডায়েট লিস্টে বেগুন রাখতে পারেন।

৬. ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে বেগুন।

যারা ব্লাড সুগারের সমস্যায় ভুগছেন। তারা বেগুন খেতে পারেন। কেননা বেগুন খেলে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকে।

৭. বেগুন চোখের জন্য খুব উপকারী।

বেগুন চোখের জন্য খুবই উপকারী। কেননা বেগুনের মধ্যে আছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, এবং ভিটামিন কে সমৃদ্ধ একটি সবজি। আর ভিটামিন এ চোখের পুষ্টি যোগায়। চোখের সমস্ত রোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। চোখের বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমায়। তাই যারা চোখের সমস্যায় ভুগছেন। তারা বেগুন খেতে পারেন তাদের জন্য উপকারী হবে।

৮. বেগুন কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।

বেগুনের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আছে। যা কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যাকে দূর করতে সাহায্য করে। তাই যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যা আছে তারা বেগুন খান।

৯. কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে বেগুন।

যাদের রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি আছে। তারা বেগুন খান। বেগুন খেলে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যাবে। এবং ভালো কোলেস্টরে মাত্র বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

১০. বেগুন রক্তাল্পতা সমস্যা কে দূর করতে সাহায্য করে।

বেগুন রক্তাল্পতা বা রক্তশূন্যতার মতো সমস্যা কে দূর করতে সাহায্য করে। কেননা বেগুনের মধ্যে আছে আয়রন। আর এই আয়রন শরীরের রক্তের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। তাই রক্তশূন্যতায় ভোগা রোগীদের জন্য বেগুন খুব উপকারী।

১১. বেগুন খেলে ঠোঁটের কোণে বা মুখে ঘা ভালো হয়ে যাবে।

অনেকের মুখের কিংবা ঠোঁটের কোণে বা জিভে ঘা হয়। এই ঘা হওয়ার কারণ, হলো রিবোফ্ল্যাবিন এর অভাব।  আর বেগুনের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে রিবোফ্ল্যাবিন এই উপাদানটি আছে। ফলে নিয়মিত বেগুন খেলে এই সমস্যা দূর করা যেতে পারে।

১২. বেগুন খেলে ডায়রিয়া ভালো হয়ে যায়।

ডায়রিয়া হলে শরীরের জিংকের ঘাটতি দেখা যায়। বেগুনের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক আছে। তাই ডায়রিয়া  ঠিক হয়ে গেলে। তারপর বেগুন খান তাহলে জিংকের ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে।

১৩. হাড় শব্দ করতে সাহায্য করে বেগুন।

বেগুন আমাদের হাড় শক্ত করতে সাহায্য করে। কেননা বেগুনের মধ্যে আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম। যা হাড়ের জন্য খুবই উপকারী। তাই বেগুন খেলে আমাদের হাড় শক্তিশালী হবে। এবং হাড়ের গঠন ও বৃদ্ধিতে বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে বেগুন।

বেগুন থেকে যারা সাবধান থাকবেন।

  1. যাদের বাতের সমস্যা আছে তারা বেগুন থেকে এড়িয়ে চলবেন।
  2. যাদের অ্যালার্জি আছে তারা বেগুন থেকে এড়িয়ে চলবেন।
  3. যাদের এজমা আছে তারা বেগুন থেকে এড়িয়ে চলবেন।

এবার জেনে নেব বেগুনের অপকারিতা সম্পর্কে। বেগুন খেলে কি কি ক্ষতি হয়?

 বেগুনের অপকারিতা:

  1. গর্ভবতী মহিলাদের জন্য বেগুন খাওয়া উচিত নয়। কারণ এটি ভ্রুনের বিকাশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
  2. যারা পেটের সমস্যায় ভুগছেন তাদের বেগুন খেলে ক্ষতি হতে পারে কেননা সেই পেটের সমস্যা চলাকালীন বেগুন খেলে পেটে ব্যথা বমি মাথাব্যথা ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।
  3.  আবার এলার্জি থাকে অনেকের বেগুনে। তাদের বেগুন থেকে এড়িয়ে চলায় ভালো।
  4. যাদের কিডনি সমস্যা আছে তারা বেগুন থেকে এড়িয়ে চলবেন। কেননা বেগুনের মধ্যে আছে অক্সালেট নামক একটি উপাদান। যা কিডনির রোগীদের জন্য ক্ষতিকারক।

    উপসংহার:

    কোন জিনিসই অতিরিক্ত খাওয়া ভালো নয়। সব জিনিসেরই একটা খারাপ দিক ভালো দিক আছে। তাই বেগুনেরও যেমন ভালো দিক আছে ঠিক তেমনি খারাপ দিকও আছে। তাই অতিরিক্ত বেগুন খাওয়া উচিত নয় সঠিক পরিমাণে খাওয়াটাই ঠিক হবে। তাই যাদের বিশেষ কোনো অসুবিধা আছে তারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তারপরে বেগুন খাবেন।

    আমরা জেনে নিলাম বেগুন খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা। আশা করি, আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে বোধগম্য হয়েছে। যদি আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে লাইক করুন। আর যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানান। সুস্থ থাকুন, ধন্যবাদ।

    Related topics: 

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *