ডিমের কুসুম খাওয়ার উপকারিতা ও ক্ষতি। Benefits and harms of eating egg yolk - ডিমের কুসুম খাওয়া কি আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে নিরাপদ? কেউ কেউ বলবেন হয়তো ডিমের কুসুম খাওয়া একদম নিরাপদ নয় আবার কেউ কেউ বলবেন হয়তো না না ডিমের কুসুম খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো। তাই আমরা তো জেনে নিতে পারি যে ডিমের কুসুম খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে নিরাপদ নাকি নিরাপদ নয়।
ডিমের কুসুম কি সত্যিই আপনার শরীরে পক্ষে ক্ষতিকারক যদি ক্ষতি কারক হয় তা কেন ক্ষতিকারক।
ডিমের কুসুম কি সত্যিই আপনার শরীরে পক্ষে ক্ষতিকারক যদি ক্ষতি কারক হয় তা কেন ক্ষতিকারক।ডিমের কুসুম খেলে আপনার রক্তে কি কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে যদি বৃদ্ধি পায় তাহলে কেন বৃদ্ধি পাচ্ছে কতটা পরিমাণে বৃদ্ধি পাচ্ছে তা জেনে নেব আমরা। একটা বহু প্রচলিত কথা রয়েছে যে, ডিমের কুসুমের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট আছে। যা আপনার হার্টের পক্ষে ক্ষতিকারক। আবার বেশ কিছু মানুষ বলেন যে ডিম খেলে তাদের এলার্জি সমস্যা হয়। যে মানুষটিরএলার্জির মতো সমস্যা হয় তার কি করা উচিত। এই প্রত্যেকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।
ডিম কুসুম শুদ্ধ খাবেন কি খাবেন না।
ডিম কুসুম শুদ্ধ খাবেন কি খাবেন না। এটা পুরো নির্ভর করছে আপনি ডিমটা কিসের জন্য মানে কি জন্য খাচ্ছেন তার ওপর। মনে করুন আপনি প্রতিদিন জিম যাচ্ছেন অথবা আপনি ওজন কমাবার জন্য পরিশ্রম করছেন। আপনি মাসেল বেল্ট করার জন্য প্রত্যেক দিন প্রচুর পরিমাণে আপনি প্রোটিন খাওয়ার চেষ্টা করছেন। জন্য আপনি প্রতিদিন পাঁচটা ছটা সিদ্ধ করে খাচ্ছেন সে ক্ষেত্রে আপনি ডিমের কুসুমটা বের করে দিয়ে সাদা অংশটা খান ,এটা ঠিক আছে ।
কিন্তু মনে করুন যদি আপনি ভাতের সবজি হিসেবে,রুটির তরকারি হিসেবে প্রত্যেকদিন আপনি এক থেকে দুটি ডিম খাচ্ছেন।তখনো যদি আপনি ডিমের থেকে ডিমের কুসুমটি বের করে ফেলছেন। সে ক্ষেত্রে ডিমের কুসুমের ভূমিকা কি রয়েছে। আপনাদের জেনে রাখা উচিত ডিমের যে সাদা অংশ আছে তাতে শুধুমাত্র প্রোটিন ছাড়া আর কিছু থাকে না।
কিন্তু ডিমের হলুদ বা কুসুমের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ভিটামিন ডি ভিটামিন কে ভিটামিন বি টু ভিটামিন বি ৩ ভিটামিন বি ফাইভ ভিটামিন বি ৬ ভিটামিন বি নাইন ভিটামিন ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি এ ধরনের ভিন্ন রকমের পুষ্টিগুণ বতমান তাই যদি আপনি ডিমের কুসুম বাদ দিয়ে শুধু সাদা অংশ খাচ্ছেন তাহলে আপনি ডিমের প্রোটিন টুকু পাচ্ছেন বাকি সমস্ত পুষ্টিগুণ আপনি বাদ দিয়ে ফেলছেন। লিউটিন এবং জিয়াজিন নামে দুই প্রকারের ইমুইটিবুস্টার রয়েছে যেগুলি আপনার শরীরে রূপ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
একটি ডিমের মধ্যে কি কি পুষ্টিগুণ রয়েছে।
কখন আসছে ফ্যাট নিয়ে একটি ডিমের কুসুমের মধ্যে কতটা পরিমাণে ফ্যাট রয়েছে যেটি আমাদের হার্টের সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। ডিমের কুসুমের যদি আমরা সাইন্টিফিক অ্যানালিসিস করি তাহলে দেখতে পাবো আমের কুসুমের ৫৪% ওয়াটার মানে জল আছে। ফ্যাট আছে ২৬% প্রোটিন আছে ১৬% আছে। কার্বোহাইড্রেট নেই বললেই চলে ,মানে ০.৬গ্রাম। একটা ডিমের ওজন ধরা হয় ৫০ থেকে ৫২ গ্রাম। ৫০ গ্রাম ডিমের মধ্যে কুসুমের ওজন থাকে ১৬ গ্রাম।
তাহলে হলে কুসুমটির মধ্যে প্রায় ৯.৫০ গ্রাম মত জল থাকে। প্রোটিন থাকে ৩ গ্রাম মত। অবশিষ্ট থাকে৪.৫০ গ্রাম মত ফ্যাট। দেখুন আমরা রান্নাতে যে সমস্ত তেল ব্যবহার করে থাকি সেই সমস্ত তেলে এক চা চামচ তেলে ৪.৫০থেকে ৫ গ্রাম ফ্যাট থাকে। অর্থাৎ এক চা চামচ তেলে যা ফ্যাট থাকে তা একটা ডিমের কুসুমের মধ্যে প্রায় এতটাই ফ্যাট থাকে। একটা যদি ডিম খেয়ে তাহলে ওই এক চা চামচ তেল আমাদের শরীরে বেশি প্রবেশ করছে। আমরা সারাদিন খাবারের সঙ্গে যা তেল খাই তার সঙ্গে একটি ডিমের কুসুম খেলে এমন কিছু ক্ষতি হয়ে যাবে না।
যা করলে কোলেস্টরলের রোগীদের ডিম খাওয়া উচিত কি উচিত না।
যা করলে কোলেস্টরলের রোগীদের ডিম খাওয়া উচিত কি উচিত না। অনেকের ধারণা রয়েছে যে ডিমের কুসুম খেলে হঠাৎ করে শরীরের রক্তের মধ্যে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। তাই সেই সমস্ত মানুষরা ডিমের কুসুমটি ফেলে দেয় ।এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল ।
কেননা আমাদের শরীরের যত পরিমাণ কোলেস্টেরল পাওয়া যায় তার ৭০ থেকে আসে লিভার থেকে ৮০% তৈরি করে লিভার থেকে,আর ২০% আসে আমরা সারাদিনে যে সমস্ত খাবার খায় সেই খাবারের মাধ্যমে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। এখন আপনি বলতে পারেন যে ওই ২০% কোলেস্টেরল আমি শরীরের মধ্যে প্রবেশ করাতে চাই না। তাই আমি ডিমের কুসুম ফেলে দিই এর মধ্যে দুটি ফ্যাক্টর কাজ করছে।
প্রথম ফ্যাক্টর হল আপনি সারাদিনের মধ্যে একটাও কোলেস্ট্রল যুক্ত খাবার খেলেই না। অর্থাৎ খাবারের মধ্যে দিয়ে আপনার শরীরে কোলেস্টেরল প্রবেশ করলো না সেক্ষেত্রে লিভার অটোমেটিকই কিন্তু শরীরে কোলেস্টেরলের উৎপাদন বৃদ্ধি করে দেয়। আবার যদি মনে করুন কোনদিন আপনি কোলেস্টেরল যুক্ত খাবার বেশি খেলেন অর্থাৎ খাবারে মধ্যে দিয়ে আপনার শরীরে বেশি বেশি কোলেস্টেরল প্রবেশ করল তখন কিন্তু লিভার তার কোলেস্টের উৎপাদন করা কমিয়ে দেয়।
তার কারণ হলো আপনি যদি আপনার শরীরের ভেতর কোলেস্টেরল প্রবেশ না করান তাহলে আপনার শারীরবৃত্তীয়করন চালানোর জন্য আপনার শরীরে কোলেস্টেরলের যে প্রয়োজন তা মেটাতে লিভার তখন আর নিজে থেকেই কোলেস্টেরল উৎপাদন করা শুরু করে দেয়। আপনি বলতে পারেন কোলেস্টের শুধুমাত্র আপনাদের শরীরে হাডের আটার মধ্যে জমা হয়ে হার্ট অ্যাটাকের সমস্যা সৃষ্টি করে দেয়। আপনাদের জেনে রাখা উচিত যে কোলেস্টেরলের কিছু ভালো দিকও আছে। কোলেস্টেরল আমাদের সেল মেমোরেন তৈরি করতে সাহায্য করে।
কোলেস্টেরল আমাদের ইষ্টোজেন, টেস্টোট্রেন এবং অ্যাড্রিনাল হরমোন তৈরি করতে সাহায্য করে। কোলেস্টেরল আমাদের শরীরের মধ্যে ভিটামিন ডি এর বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। কোলেস্টেরল আমাদের হাড়কে মজবুত রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া অসংখ্য উপকরণ রয়েছে কোলেস্টরলের মধ্যে। আমাদের শরীরে কোলেস্টরলের বিশেষ দরকার।
দেখুন আপনি যদি সুস্থ মানুষ এবং আপনি যদি নিয়মিতভাবে ডিমের কুসুম খেতে থাকেন বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে ওই ডিমের কুসুম রক্তে এইচ ডি এল অর্থাৎ গুড কোলেস্টেরল মাত্রা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং তার সাথে সাথে যে সমস্ত সুস্থ মানুষরা নিয়মিতভাবে ডিম খান তাদের ৭০% মানুষের রক্তে LDL বা খারাপ কোলেস্টেরল বৃদ্ধি হয়নি।
৩০% মানুষের রক্তে এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পেতে দেখা গিয়েছে। ৩০%মানুষের রক্তে খারাপ কোলেস্ট্রল বৃদ্ধি পেয়েছে তাদের এই খারাপ কোলেস্টেরলের যে এল ডি এল এর পার্টিকেলের সাইজ তুলনামূলক ভাবে অন্যান্য এলডিএল এর থেকে বড় হয়। আর যে সমস্ত এল ডি এল এর সাইজ ছোট হয় তারা সহজেই আমাদের হার্টের আটারের মধ্যে জমা হয়। আপনি যদি নিয়মিতভাবে ডিম খান আর আপনার রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা হঠাৎ করে বৃদ্ধি পাবে। এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা ।
একজন হার্টের রোগের একটি গোটা ডিম খাওয়া কি শ্রেয়?
এখন আসা যাক আপনি মনে করুন আপনি একজন হার্টের রোগী আপনি একজন কোলেস্টেরলের রোগী। তাহলে আপনার কি ডিমের কুসুম খাওয়া শ্রেয়। আপনি যদি হার্টের রোগী হন বা আপনার রক্তে যদি আগের থেকেই কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে তাহলে আপনার খাবারের মধ্যে দিয়ে যে কোলেস্টেরল আপনার শরীরে প্রবেশ করে তার সীমা হল ২০০ মিলিগ্রাম আর একটা ডিমের কুসুমের মধ্যে কোলেস্টেরল থাকে ১৮৬.৫ মিলিগ্রাম।
আপনি যদি একজন হার্টের রোগী হয়ে থাকেন তাহলে আপনি নির্দ্বিধায় প্রত্যেকদিন ভাতে একটা করে গোটা ডিম কুসুম সহ খেতে পারেন। আবার দেখুন কখনো কখনো লিভার প্রয়োজন এর থেকে বেশি কোলেস্টেরল উৎপাদন করতে থাকে।
কেন দেখুন বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে আর যখন বেশি বেশি পরিমাণে কোলেস্টের উৎপাদন করছে তার কারণগুলোই রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম এবং প্রধান কারণ গুলি হল ইনসুলিন রেজিস্টেন্ড অর্থাৎ আপনার রক্তে ইনসুলিন ঠিকঠাক যদি কাজ করতে না পারে সুনীল রেজিস্ট্রিন্ডে আপনার শরীরকে বেশি বেশি কোলেস্টেরল উৎপাদন করতে বাধ্য করে।
উপসংহার
আপনি যদি অলস জীবনযাত্রা করছেন অর্থাৎ নিয়মিতভাবে ফিজিক্যাল এক্সারসাইজ করছেন না বেশি বেশি করে ফাস্টফুড খাচ্ছেন সে দিক দিয়ে আপনার নেই কিন্তু খাবার থালায় বসে ডিমের কুসুমটি ফেলে দিতে ভুলছেন না সেক্ষেত্রে কিন্তু আপনাকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে ডিমের কুসুম ফেলে না দিয়ে নিয়মিতভাবে ফিজিক্যাল এক্সারসাইজ করতে সমস্ত রকম ফাস্টফুড থেকে দূরে থাকার জন্য।
বেশ কিছু মানুষ বলে থাকেন ডিম খেলে আমার শরীরে চুলকানি হয় হজম হয় না ঠিকঠাক বদ হজম হয়। ডিমের মধ্যে যে প্রোটিন রয়েছে সেই প্রোটিনটি আমাদের শরীরের যে ইমিউন সিস্টেম আছে।সেই ইমিউন সিস্টেম কখনো কখনো শত্রু ভেবে বসে। তখন আমাদের শরীরে এই এলার্জি সৃষ্টি হতে পারে। এই ডিম খাওয়ার সাথে সাথে আপনার শরীরে যদি বিভিন্ন রকম শারিরীক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে তাহলে আপনার ডিম থেকে দূরে থাকাই ভালো।
Hi
উত্তরমুছুনI like the article