টমেটো খাওয়ার উপকারিতা। Benefits and harms of eating Tomatoes. টমেটো এমন একটি ফল। যা আমরা সবজি হিসেবে গ্রহণ করে থাকি। টমেটো একটি শীতকালীন সবজি। কিন্তু এখন প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায়। টমেটো খুবই সহজলভ্য একটি সবজি।
টমেটোর উৎস স্থল:
টমেটোর আদি উৎস হল দক্ষিণ আমেরিকা এবং মধ্য আমেরিকাকে ধরা হয়। প্রথম যখন ইউরোপিয়ানরা টমেটোকে দেখে এবং বিষাক্ত ভেবে এড়িয়ে গিয়েছিল কিন্তু তারপর স্প্যানিশরা বিশ্বের দরবারে টমেটোকে খাদ্যবস্তু হিসেবে দেখিয়েছিল। তারপর ইউরোপে, ফিলিপিন্স হয়ে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়াতেও টমেটোর ব্যবহার শুরু হয়।
বর্তমানে টমেটো উৎপাদনে প্রথম স্থান অধিকারী আমাদের দেশ ভারতবর্ষ। টমেটো প্রধানত লাল রঙের হয়।
Must read : আলু খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা। Benefits and harms of eating potatoes
টমেটোর পুষ্টিগুণ:
- ভিটামিন সি
- ভিটামিন কে
- ভিটামিন বি ১
- ভিটামিন বি ৩
- ভিটামিন বি ৬
- ভিটামিন বি ৭
- আয়রন
- পটাশিয়াম
- ম্যাগনেসিয়াম
- ক্রোমিয়াম
- কোলিন
- ফোলেড
- জিঙ্ক
- ফসফরাস।
আমরা এবার জেনে নেব টমেটোর মধ্যে কি কি উপকারিতা আছে?
টমেটোর উপকারিতা:
১.কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে টমেটো।
কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যাকে দূর করতে সাহায্য করে একটি লাল টুকটুকে পাকা টমেটো।
২. টমেটো খেলে গলা ফোলা কমে যায়।
টমেটো গলা ফোলা কমাতে সাহায্য করে ঠান্ডার কারণে অনেক সময় গলা ব্যথা হয় তখন লাল টমেটো ক্কাথ তৈরি করে ১০ থেকে ২০ মিলিগ্রাম পান করলে গলা ফোলা ও মুখের ফোলা ভাব কমে যায়।
৩. টমেটো আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে।
টমেটো খেলে টমেটো আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। কেননা ভিটামিনে ভরপুর টমেটো। তাই নিয়মিত টমেটো খেলে শরীরে শক্তি বাড়ে ও সুস্থ থাকে।
৪. টমেটো কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
টমেটো খেলে কোলেস্টেরল মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। কেননা টমেটোর মধ্যে আছে ভিটামিন বি, ভিটামিন এ এবং পটাশিয়াম। যা কোলেস্টেরলের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে, সেই সঙ্গে রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে টমেটো।
৫. টমেটো আমাদের শরীরের রক্তের শূন্যতা দূর করে।
টমেটো খেলে আমাদের শরীরের রক্তের শূন্যতা দূর হয়ে যায়। নিয়মিত একটি করে টমেটো খেলে রক্তের কণিকা গুলি বৃদ্ধি পাবে।
এবং রক্তশূন্যতার মতো রোগকে দূর করা সম্ভব হবে। এছাড়াও টমেটোর মধ্যে আছে রক্ত পরিষ্কার করার মত এবং ভালো হজম হওয়ার মতো বেশ কিছু গুণ।
৬. টমেটো ত্বক পরিষ্কার ও সতেজ রাখতে সাহায্য করে।
টমেটো খেলে আমাদের তো পরিষ্কার হবে এবং সতেজ হবে। কেননা টমেটোর মধ্যে আছে লাইকোপিন যা তোকে পরিষ্কার করতে কাজ করে।
এছাড়াও টমেটোর মধ্যে আছে ভিটামিন সি। যা ত্বকের জন্য খুবই দরকারি। রোদে পোড়া ভাব, বলিরেখা এবং চোখের নিচে কালো দাগ দূর করতে টমেটো বিশেষভাবে কার্যকারী। টমেটোর রস মুখে মাখলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
৭. টমেটো খেলে হাড় শক্ত হয়।
টমেটো খেলে আমাদের হার শক্ত হয়। কেননা, টমেটোর মধ্যে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন কে এবং ক্যালসিয়াম। যা আমাদের হাড় খেয়ে শক্ত করতে সাহায্য করে।
৮. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে টমেটো।
টমেটো পেলে আমাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। কেননা টমেটোর মধ্যে আছে, ক্রমিয়াম নামো একটি খনিজ পদার্থ যা শব্দের সরকারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে তাই ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য টমেটো খুবই উপকারী।
৯. টমেটো ক্যান্সারে ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
টমেটো ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, টমেটোতে থাকে উচ্চমানের লাইকোপিন। যেটা প্রেসটেড, কোলন এবং পাকস্থলীর ক্যান্সার সেল তৈরিতে বাধা দেয়।
লাইকোপিন হচ্ছে এক প্রকারের প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা ক্যান্সারের সেল তৈরি করতে বাধা দেয়। তাই টমেটো খাবেন। বর্তমানে ক্যান্সার একটি কঠিন রোগ। ক্যান্সারে ঝুঁকি কমাতে নিয়ম টমেটো খান।
১০. টমেটো দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
টমেটো দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। কেননা, টমেটোর মধ্যে আছে ভিটামিন এ। আর ভিটামিন এ আমাদের চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
এমনকি রাতকানার মতো রোগ দূর করতেও সাহায্য করে। তাই যাদের রাতকানা রোগের মত সমস্যা আছে, তারা প্রতিদিন ১ থেকে ২ টি টমেটো খান। এই রোগকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আগে থেকে নিয়মিত টমেটো খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন।
টমেটোর অপকারিতা:
১. বেশি টমেটো খেলে গ্যাস্ট্রিকের মত সমস্যা বৃদ্ধি পাবে।
টমেটোর মধ্যে আছে সাইট্রিক এবং ম্যালিক অ্যাসিড। যা পাকস্থলীতে অম্ল প্রবাহের সৃষ্টি করে। এর ফলে গ্যাস্ট্রিকের মতো সমস্যা বেড়ে যায়।
২. যারা পেটের রোগে ভুগছেন। তারা অতিরিক্ত টমেটো খাওয়া থেকে দূরে থাকবেন।
৩. অতিরিক্ত টমেটো খাওয়ার ফলে এলার্জি ও হতে পারে।
টমেটোর মধ্যে আছে হিস্টামিন নামক এক ধরনের উপাদান। যার ফলে ত্বকের অ্যালার্জি সৃষ্টি হয়। তাই অতিরিক্ত টমেটো খেলে মুখে ফোলা ভাব, হাঁচি, গলায় জ্বালা, জিহ্বা ফুলে যায় ইত্যাদি সমস্যা সৃষ্টি হয়।
৪. অতিরিক্ত টমেটো খেলে কিডনিতে পাথর হতে পারে।
অতিরিক্ত মাত্রায় টমেটো খেলে কিডনিতে পাথর পর্যন্ত হতে পারে। কেননা টমেটোর মধ্যে আছে ক্যালসিয়াম ও অক্সালেট। যা শরীর থেকে সহজে বের হয় না।
এগুলো শরীরের মধ্যে জমা হতেই শুরু করলেই কিডনিতে পাথর হয়ে যায়।
৫. টমেটোর মধ্যে সালমোনেলা নামক এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকে। যা ডায়রিয়ার জন্য দায়ী।
আমরা জেনে নিলাম টমেটো খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা। সবশেষে বলি সব জিনিসেরই যেমন ভালো দিক আছে ঠিক তেমনি খারাপ দিকও আছে।
সেই রকম, টমেটোর যেমন ভালো দিক আছে ঠিক সেরকম খারাপ দিকও আছে। তাই সবকিছু জেনে বুঝে সঠিক পরিমাণে টমেটো খাবেন।
আশা করি আপনাদের কাছে আমাদের এই আর্টিকেলটি ভালো লেগেছে এবং বোধগম্য হয়েছে। যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্টে জানান। সুস্থ থাকুন, ধন্যবাদ।
Related Topics
- টমেটো খাওয়ার নিয়ম
- পাকা টমেটো খাওয়ার উপকারিতা
- সকালে খালি পেটে টমেটো খাওয়ার উপকারিতা
- টমেটো খেলে কি গ্যাস হয়
- পাকা টমেটো খেলে কি হয়
- টমেটো খেলে কি ওজন কমে
- টমেটোর উপকারিতা ও অপকারিতা
- লাল টমেটোর উপকারিতা
- টমেটো খাওয়ার অপকারিতা
- পাকা টমেটো খাওয়ার অপকারিতা
- টমেটো মুখে মাখার উপকারিতা
- সকালে খালি পেটে টমেটো খাওয়ার উপকারিতা
- শসার উপকারিতা ও অপকারিতা
- টমেটো খেলে কি ওজন কমে
- টমেটোর বিচি খেলে কি হয়
- কাঁচা টমেটোর উপকারিতা ও অপকারিতা