Watermelon - তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা - তরমুজ একটি রসালো এবং গ্রীষ্মকালীন ফল। তরমুজ খেতে আমরা কমবেশি প্রায় সকলেই ভালোবাসি। তরমুজের মধ্যে বিপুর পরিমাণের জল থাকে। তো আজকে আমরা আমাদের এই আর্টিকেলের জেনে নেব তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে বিশেষ কিছু অজানা তথ্য।
Watermelon 🍉 |
তরমুজ কেমন হয়?
তরমুজ একটি রসালো ফল। গ্রীষ্মকালীন ফল তরমুজ। তরমুজ দেখতে বাইরেটা গার্ড সবুজ রঙের হয় এবং তরমুজে ভিতরটা টকটকে লাল রঙের হয়।
কি কিভাবে তরমুজ খাওয়া যায়?
তরমুজকে আমরা বিভিন্নভাবে খেতে পারি। যেমন - সোজাসুজি তরমুজকে কেটে খেতে পারি, আবার জুস বানিয়েও খেতে পারি।
তরমুজ ইংরেজি কি?
তরমুজের ইংরেজি হল Watermelon ।
তরমুজের বিজ্ঞান সম্মত নাম কি?
তরমুজের বিজ্ঞান সম্মত বা বৈজ্ঞানিক নাম হলো Citrullus Lanatus ।
তরমুজের পুষ্টি গুন:
- ভিটামিন সি
- ভিটামিন ই
- ভিটামিন এ
- ম্যাগনেসিয়াম
- পটাশিয়াম
- জিংক
- ফাইবার
এবার আমরা জেনে নেব ১০০ গ্রাম তরমুজের মধ্যে কি কি পুষ্টিগুণ আছে।
প্রতি ১০০ গ্রাম তরমুজের পুষ্টিগুণ:
- প্রোটিন ০.৬ গ্রাম
- ফ্যাট ০.২ গ্রাম
- কার্বোহাইড্রেট ৭.৬ গ্রাম
- সুগার ৬.২ গ্রাম
- ক্যালরি: ৩০
- জল ৯১ শতাংশ
- ফাইবার ০.৪ গ্রাম
এবার আমরা জেনে নেব, তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেব।
তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা
১. ত্বকের জন্য উপকারী তরমুজ।
ত্বকের জন্যে খুবই উপকারী তরমুজ। ত্বকের মেচেতা দূর করতে প্রত্যেক দিন নিয়মিত তরমুজ খান। কারণ তরমুজের মধ্যে আছে ভিটামিন এ। যা ত্বকের জন্য উপকারী। নিয়মিত প্রতিদিন তরমুজ খেলে আপনার ত্বকের হারিয়ে যাওয়া লাবণ্য ফিরে পেতে পারেন।
২. তরমুজ হাড় সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
তরমুজ হারকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। মানুষের বয়স বাড়ার সাথে সাথে শরীরে হাড়ের ক্যালসিয়ামের অভাব হতে পারে। আর এমন সময় শরীরে ক্যালসিয়ামের চাহিদাও বৃদ্ধি পেতে থাকে। এই বাড়তি চাহিদা পূরণ করতে না পারলে হাতে, পায়ে, কোমরে ব্যথা সমস্যা সৃষ্টি হয়।
যদি আপনি নিয়মিত তরমুজ খান, তবে এরকম সমস্যা থেকে রেহাই পেতে পারেন। কারণ তরমুজের মধ্যে যে ক্যারোটিন এবং ক্যালসিয়াম যা আপনার হাড়কে মজবুত রাখতে সাহায্য করে।
৩. হার্টকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে তরমুজ।
তরমুজ এমন একটি ফল যা হার্টের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এছাড়াও তরমুজের মধ্যে আছে ভিটামিন সি, ক্যারোটিন এবং পটাশিয়াম। যা শরীরে কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। ফলে হার্ট বড় ধরনের বিপদ থেকে সুরক্ষিত থাকে।
কিন্তু তার মানে এই নয়, যারা হার্টের সমস্যায় ভুগছেন তারা শুধুই তরমুজ খেয়ে সুস্থ হবার আশায় দিন কাটাবেন। বুকে ব্যথা হলে বা হার্টের সমস্যা থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের সাহায্য নেবেন।
৪. দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে তরমুজ সাহায্য করে।
প্রত্যেকদিন খাবারে তরমুজ থাকলে দৃষ্টি শক্তি ভালো থাকবে। কেননা, তরমুজের মধ্যে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ। আর ভিটামিন এ থাকা ফলে দৃষ্টিশক্তির স্বাভাবিক থাকে। আর রাতকানা রোগ হওয়া থেকে আটকাবে।
৫. তরমুজ কিডনির কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
তরমুজ কিডনিকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। কিডনির কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে তরমুজ।
৬. তরমুজ অ্যাজমা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
তরমুজ অ্যাজমা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। কারণ তরমুজের মধ্যে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি। এছাড়াও ফুসফুস কে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
৭. প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধের সাহায্য করে তরমুজ।
প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে তরমুজ সাহায্য করে।
এবার আমরা জেনে নেবো তরমুজের অপকারিতা সম্পর্কে বিশেষ কিছু তথ্য।
৮. হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে তরমুজ।
তরমুজ হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। কারণ তরমুজের মধ্যে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার। যা হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এমনকি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও সাহায্য করে।
৯. তরমুজ রূপচর্চায় সাহায্য করে।
তরমুজের মধ্যে আছে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি ৬ এবং ভিটামিন সি। যা আমাদের ত্বকে নরম মসৃণ এবং কোমল রাখতে সাহায্য করে।
তরমুজকে আমরা ফেসপ্যাক হিসেবে ও ব্যবহার করতে পারি। এক টেবিল চামচ দই এবং তরমুজের রস ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর মুখের ওপর লাগিয়ে রাখতে হবে। মুখে লাগানোর ১০ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলতে হবে। ত্বক শুষ্ক এবং নিস্তেজ ত্বকে সতেজ এবং মসৃণ করতে সাহায্য করবে।
১০. তরমুজ পেশির ব্যথা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
তরমুজের মধ্যে আছে উচ্চ জলীয় উপাদান, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যামিনো অ্যাসিড। জিমে থেকে আসার পর যদি তরমুজের এক গ্লাস জুস খাওয়া যায়। তাহলে আপনার পিসির ব্যথা দূর করতে সাহায্য করবে।
১১. তরমুজ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করে।
তরমুজ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। কারণ তরমুজের মধ্যে কার্বোহাইড্রেট এর মাত্রা খুব কম পরিমাণে আছে।
তরমুজ খাওয়ার নিয়ম:
নিখুঁত ভালো তরমুজ কিনে আনতে হবে। তারপর ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। তরমুজ যেটা দিয়ে কাটবেন সেটি ছুরি হতে পারে বা বঁটি সেটিও ভালো করে ধুয়ে নেবেন। তরমুজটি কাটার পর সঙ্গে সঙ্গে খেয়ে নেবেন। কারণ তরমুজ কেটে সঙ্গে সঙ্গেই খেতে ভালো লাগে।
তরমুজ কিনে আনার পর পাঁচ দিন পর্যন্ত ফ্রিজে রাখতে পারেন।
তরমুজকে কি কিভাবে খাওয়া যায়?
এক টুকরো সতেজ তরমুজ খেতে দারুণ লাগে। তবে তরমুজকে আরও সুস্বাদু কর খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে। পনির দিয়ে টুকরো টুকরো করে কেটে সালাদ বানানো যেতে পারে। দই পুদিনা বাদাম এবং বেরি দিয়ে তরমুজের পিজ্জা তৈরি করা যেতে পারে।
তরমুজের অপকারিতা:
কোন জিনিসই অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয় তাই অতিরিক্ত তরমুজ খাওয়াও ঠিক নয় অতিরিক্ত তরমুজ খেলে বদহজম, বারবার পায়খানা যাওয়া, পেট খারাপ ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
উপসংহার:
আজকে আমরা আমাদের এই আর্টিকেলে জেনে নিলাম তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে বিশেষ কিছু অজানা তথ্য। এছাড়াও আরো জানলাম তরমুজের বিজ্ঞানসম্মত নাম, তরমুজের ইংরেজি কি? তরমুজের অপকারিতা কি? ইত্যাদি সব রকম বিষয়ে জেনে নিলাম। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে বোধগম্য হয়েছে এবং ভালো লেগেছে। যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্টে জানান। ধন্যবাদ জানাই বন্ধুদেরকে যারা আমাদের এই আর্টিকেলটিকে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েছেন। সুস্থ থাকুন।