Teeth Problems Home Remedies পোকা দাঁতের ব্যথা কমানোর উপায়। |
Teeth Problems Home Remedies: পোকা দাঁতের ব্যথা কমানোর উপায়। ব্যথা যেখানেই হোক না কেন একটা অস্বস্তি তো হয়। আর যখন দাঁতে ব্যাথার কথা আসে তখন এটি কোন সমস্যার থেকে কম হয় না। যখন কিছু খেতে খেতে হঠাৎ করে দাঁতে ব্যথা শুরু হয়ে যায় তখন খাওয়ার আনন্দটাই নষ্ট হয়ে যায়। অনেক সময় মানুষ দাঁতে ব্যথার ওষুধ খেয়ে থাকে। কিন্তু অনেক সময় এমনও হয় যে দাঁতে ব্যথা দেখা দেয় যখন ডাক্তার দেখানো সম্ভব হয় না। এই রকম পরিস্থিতিতে কি করবেন কি করা উচিত আজকে আমরা আমাদের এই আর্টিকেলটিতে আলোচনা করব।
দাঁতে ব্যাথার কারন:
- দাঁতে আঘাত পাওয়া
- দাঁতের ক্ষয়
- মুখে ঘা
- ভাঙা দাঁত
- দাঁতের ভিতরে ফোলা
- মাড়ি ফুলে যাওয়া (দাঁতের মাড়িতে ব্যথা হলে করণীয়)
- ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে সৃষ্টি দাঁতের ক্ষয় অথবা সংক্রমণ
- চোয়ালে বা মুখে আঘাত
- আক্কেল দাঁত
- কানে ব্যথা ইত্যাদি।
দাঁতে ব্যাথার লক্ষণ:
- গরম অথবা ঠান্ডা খাবার খাওয়ার সময় সংবেদন বোধ করা।
- কোন কিছু খাবার জীবাণুর সময় দাঁতে ব্যথা অথবা ঝাকুনি অনুভূতি হওয়া।
- দাঁতে থেকে রক্ত পড়া ও মাড়ি দুর্বল হয়ে যাওয়া।
- চোয়াল এবং মুখের ফোলা ভাব।
দাঁতে ব্যাথার ঘরোয়া প্রতিকার অথবা চিকিৎসা ( দাঁতের ব্যাথার প্রাথমিক চিকিৎসা ):
দাঁতে ব্যথা কমানোর জন্য ঘরোয়া উপায় গুলি অবলম্বন করা যেতে পারে, ঘরোয়া উপায়গুলি নিচে পড়ুন। তবে একটা কথা মনে রাখা খুবই দরকার যদি ঘরোয়া পদ্ধতিতে দাঁতে ব্যথা বা এই সমস্যা কিছুটা কমতে সাহায্য করতে পারে। যদি দাঁতের ব্যথা খুবই বেড়ে যায় তখন অতি শীঘ্রই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
১. দাঁতে ব্যাথার জন্য আদা গুঁড়ো ( পোকা দাঁতের ব্যথা কমানোর উপায় ) :
উপাদান:
- অর্ধেক চা চামচ আদা গুঁড়ো
- জল
ব্যবহার:
- আদা গুড়োর সাথে জল মিশিয়ে ভালো ভাবে পেস্ট তৈরি করতে হবে।
- তারপর এই পেজটি ব্যথা যুক্ত স্থানে বা দাঁতে লাগাতে হবে।
- কিছুক্ষণ রেখে দিতে হবে, তারপর ধুয়ে ফেলতে হবে।
- আদা গুঁড়ো যদি না থাকে তাহলে এক টুকরো আদা পিষে নিয়ে দাঁতের ব্যথাযুক্ত স্থানে লাগাতে পারেন।
২. দাঁতে ব্যথার জন্য লবঙ্গ তেল ( পোকা দাঁতের ব্যথা কমানোর উপায় ):
- উপাদান:
- ১ থেকে ২ ফোটা লবঙ্গ তেল
- তুলো
- ব্যবহার:
- যে দাঁতে ব্যথা হচ্ছে যেখানে তুলোর সাহায্যে লবঙ্গ তেল লাগাতে হবে।
- ওই তেলটা গিলে না ফেলার চেষ্টা করতে হবে দাঁতে কিছুক্ষণ থাকতে দিতে হবে।
- তারপর ধুয়ে ফেলতে হবে।
- এই পদ্ধতিটি পুরোদিনে তিন থেকে চার বার প্রয়োগ করা যেতে পারে।
- এছাড়াও দাঁতের ব্যথায় লবঙ্গ চেপে ও ব্যবহার করা যেতে পারে।
৩. দাঁতের ব্যথার জন্য পেঁয়াজ:
উপাদান:
- একটা কাঁচা পেঁয়াজ
- ব্যবহার:
- দাঁতের যেখানে ব্যথা সেখানে এক টুকরো পিঁয়াজ লাগাতে হবে।
- তারপর কয়েক মিনিটের জন্য বসতে দিতে হবে।
- ব্যথা কম না হওয়া পর্যন্ত দিনে দুইবার এই পদ্ধতিটি করতে হবে।
৪. দাঁতের ব্যথার জন্য রসুন:
উপাদান:
- একটি রসুনের কোয়া নিতে হবে
- এক চা চামচ সিলা নুন অথবা সাধারন নুন
- রসুনের কোয়াটাকে ভাল ভাবে পিষে নিয়ে শিলা নুন অথবা সাধারণ নুন মেশাতে হবে।
- এই ভাবে দিনে দুইবার অল্প অল্প করে লাগাতে হবে।
৫. দাঁতে ব্যথার জন্য নুন জল ( দাঁত ব্যথা হলে করণীয় ):
উপাদান:
- এক গ্লাস হালকা গরম জল
- এক চা চামচ নুন
ব্যবহার:
- হালকা গরম জলে নুনটা ভালো ভাবে মিশিয়ে নিতে হবে।
- তারপর এই নুন জল দিয়ে ভালো ভাবে কুলকুঁচু করতে হবে।
- এই পদ্ধতিটি দিনে তিন থেকে চার বার করতে হবে।
৬. দাঁতে ব্যথার জন্য বেকিং সোডা:
উপাদান:
- অর্ধেক থেকে এক চা চামচ বেকিং সোডা
- জল
- তুলো
ব্যবহার:
- জলে তুলোটা ভিজিয়ে নেওয়ার পর তার উপর থেকে বেকিং সোডা লাগাতে হবে।
- তারপর বেকিং সোডা ও তুলো ব্যথা যুক্ত দাঁতে লাগাতে হবে।
- এই পদ্ধতিটি দিনে দুই থেকে তিনবার করতে হবে।
- হালকা গরম জলে বেকিং সোডা মিশিয়ে কুলকুঁচু করতে পারেন।
৭. দাঁতে ব্যথার জন্য পেয়ারা পাতা ( দাঁতের ব্যথার গাছ ):
উপাদান :
- চার-পাঁচটা পেয়ারা পাতা
- জল প্রয়োজন মত
ব্যবহার:
- পেয়ারা পাতাগুলিকে ভালো ভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
- তারপর জলে ফুটিয়ে নিতে হবে।
- তারপর পেয়ারা পাতাগুলি জল থেকে ছেঁকে নিতে হবে।
- ওই জলে নুন দিতে হবে।
- তারপর ওই জলটা দিয়ে কুলকুচি করতে পারেন।
- আবার দাঁতে ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে সতেজ পেয়ারা পাতা চিবিয়ে খেতে পারেন।
৮. দাঁতের ব্যাথার জন্য দারুচিনির গুঁড়ো ( দাঁতের যন্ত্রণা কমানোর ওষুধ ):
উপাদান:
- এক চা চামচ দারুচিনির গুঁড়ো
- পাঁচ থেকে ছয় চা চামচ মধু
ব্যবহার:
- দারুচিনির গুড়োর সাথে মধু মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করতে।
- তারপর ওই পেজটি যে দাঁতে ব্যথা আছে সেখানে লাগাতে হবে।
- কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলতে হবে।
দাঁতে ব্যাথার সময় কি খাবেন:
দাঁতে ব্যথার সময় নরম জিনিস খেতে হবে।
- আলু সিদ্ধ
- চিনি যুক্ত মিল্কশেক
- মশলা ছাড়া খাবার
- জুস
- পাকা কলা
- সুজি ইত্যাদি।
দাঁতে ব্যাথার সময় কোন খাবার খাওয়া উচিত নয়:
- অতিরিক্ত মাত্রায় মিষ্টি অথবা চিনি যুদ্ধ খাবার খাওয়া থেকে এড়িয়ে যেতে হবে।
- খুব গরম বা খুব ঠান্ডা খাবার খাওয়া অথবা পান করা যাবে না।
- অতিরিক্ত তেল এবং মসলাযুক্ত খাবার না খাওয়াই ভালো।
- খুব শক্ত খাবার খাবেন না।
- ব্যথা যদি খুব বেশি হয় তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ সাথে সাথে ডায়েট চার্ট সম্পর্কেও চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
দাঁতের ব্যথার জন্য কোন সময় একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ নেওয়া উচিত?
- দাঁতের ব্যথা যখন খুব হবে।
- যখন দাঁতের ব্যথা এক থেকে দুই দিনের বেশি স্থায়ী হবে তখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
- কিছু খেতে অথবা গিলতে অসুবিধা হচ্ছে তখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
- মুখে ফোলা ভাব আছে তখন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
- কোন খাবার খেতে অথবা গিলতে অসুবিধা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
- দাঁতের ব্যাথার সাথে সাথে জ্বর, কানে ব্যথা অথবা মুখ খুললে ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
- দাঁতে ব্যাথার সাথে সাথে যদি শ্বাস নিতে অসুবিধা হয় তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
দাঁতে ব্যথা প্রতিরোধের উপায়:
- মুখের অথবা মৌখিক স্বাস্থ্যবিধির যত্ন নিতে হবে।
- কম চিনি যুক্ত খাবার খেতে হবে।
- তামাক খাওয়া যাবে না।
- চিনি যুক্ত পানীয় খাবেন না।
- ধূমপান করবেন না।
- ফ্লোরাইড যুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করতে পারেন।
- ফাইবার যুক্ত ফল ও শাকসবজি খাবেন।
- ফ্লস দাঁত পরিষ্কার রাখতে হবে।
- সময় সময় দাঁত বিশেষজ্ঞ চেকআপ করাতে হবে।
দাঁতের মাড়িতে ব্যথা হলে করণীয়:
দাঁতের মাড়িতে ব্যথা হলে করণীয় -
উপাদান:
- এক গ্লাস হালকা গরম জল
- এক চা চামচ নুন
ব্যবহার:
- হালকা গরম জলে নুনটা ভালো ভাবে মিশিয়ে নিতে হবে।
- তারপর এই নুন জল দিয়ে ভালো ভাবে কুলকুঁচু করতে হবে।
- এই পদ্ধতিটি দিনে তিন থেকে চার বার করতে হবে।
দাঁতের ইনফেকশনের ঔষধ
দাঁতে ব্যথার জন্য পেয়ারা পাতা (পোকা দাঁতের ব্যথা কমানোর ঔষধ ):
উপাদান :
- চার-পাঁচটা পেয়ারা পাতা
- জল প্রয়োজন মত
ব্যবহার:
- পেয়ারা পাতাগুলিকে ভালো ভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
- তারপর জলে ফুটিয়ে নিতে হবে।
- তারপর পেয়ারা পাতাগুলি জল থেকে ছেঁকে নিতে হবে।
- ওই জলে নুন দিতে হবে।
- তারপর ওই জলটা দিয়ে কুলকুচি করতে পারেন।
- আবার দাঁতে ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে সতেজ পেয়ারা পাতা চিবিয়ে খেতে পারেন।
উপসংহার:
আজকে আমরা আমাদের এই আর্টিকেলটিতে জেনে নিলাম (Teeth Problems Home Remedies: পোকা দাঁতের ব্যথা কমানোর উপায়।) দাঁতে ব্যাথার কারণ, লক্ষণ, তার ঘরোয়া প্রতিকার সম্পর্কে। আশা করি আপনাদের কাছে আমাদের এই আর্টিকেলটি বোঝার মতো হয়েছে। যদি ভালো লাগে তো বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন। আমাদের এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য ধন্যবাদ বন্ধুদের। সুস্থ থাকুন।