Camel's Milk Benefits and Side Effects: উটের দুধ পানের উপকারিতা ও অপকারিতা।
আমরা সকলেই গরুর দুধ, মোষের দুধ এর উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে জানি। কিন্তু আমরা কি জানি উটের দুধ ও আমাদের জন্য কতটা উপকারী হতে। পারে চলুন আজকে আমরা আমাদের এই আর্টিকেলের জন্য উটের দুধ পান করার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।উটের দুধ পানের উপকারিতা ও অপকারিতা
উটের দুধের পুষ্টিগুণ:
- জিঙ্ক - ০.৫৩ মিলিগ্রাম
- ম্যাঙ্গানিজ - ০.০৫ মিলিগ্রাম
- ম্যাগনেসিয়াম - ১০.৫ মিলিগ্রাম
- আয়রন - ০.২৯ মিলিগ্রাম
- সোডিয়াম - ৫৯ মিলিগ্রাম
- পটাসিয়াম - ১৫৬ মিলিগ্রাম
- ক্যালসিয়াম - ১১৪ মিলিগ্রাম
এবার আমরা জেনেব উটের দুধ পানের উপকারিতা সম্পর্কে।
উটের দুধের উপকারিতা
১. উটের দুধ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক:
উটের দুধের মধ্যে আছে অ্যান্টিহাইপারগ্লাইসেমিক বৈশিষ্ট্য যার রক্তের শর্করার মাত্রা কমাতে সহায়ক। আমেরিকার একটি গবেষণায় দেখা গেছে উটের দুধ লিপিড প্রোফাইল উন্নত করে আর ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে।
২. উটের দুধ কিডনির জন্য উপকারী:
উটের দুধ কিডনি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে। আমরা প্রায় সকলেই জানি না যে জেন্টামাইসিন অর্থাৎ ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের জন্য ব্যবহৃত একটি অ্যান্টিবায়োটিক যার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার নেফ্রোটক্সিক প্রভাব অর্থাৎ কিডনির ক্ষতি সৃষ্টি করতে পারে। আর এখন উটের দুধ কার্যকর ভাবে সামনে আসতে পারে।
৩. উটের দুধ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে:
উটের দুধের মধ্যে আছে আন্টিঅক্সিডেন্ট যার ওপর প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এছাড়াও আছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য যা বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে আমাদের শরীরকে শক্তিশালী করে।
৪. উটের দুধ অ্যালার্জি থেকে ত্রাণ প্রদান করে:
উটের দুধ ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাক জনিত অ্যালার্জি থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করতে পারে। উটের দুধের মধ্যে আছে অ্যান্টিফাঙ্গাল, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিভাইরাস এবং অ্যান্টিইনফ্লেটারি বৈশিষ্ট্য। যা এলার্জি সৃষ্টি কারী ব্যাকটেরিয়া গুলি দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও অ্যান্টিইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য থাকার কারণে অ্যালার্জির কারণে প্রদাহ কমাতে উপকারী বলে প্রমাণিত হতে পারে।
৫. উটের দুধ লিভারের জন্য উপকারী:
আমেরিকার একটি গবেষণায় দেখা গেছে উটের দুধ লিভার কে সুস্থ রাখতে সাহায্য করতে পারে। লিভারের কাজগুলির মধ্যে একটি হলো রক্তের নির্দিষ্ট এনজাইম মুক্ত করা। যখন লিভারে ভাইরাসের আক্রমণ করে, আর লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয় তখন এই এনজাইমের মাত্রা বৃদ্ধি হয়। হেপাটাইটিস সি রোগীদের ওপর গবেষণায় দেখা গেছে যে উটের দুধ লিভারের এই এনজাইম বৃদ্ধির মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। যেটা লিভারের স্বাস্থ্যর একটি ইতিবাচক লক্ষণ।
৬. উটের দুধ ক্যান্সার প্রতিরোধক:
উটের দুধ ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে অটোফ্যাজি প্রচার করে স্তন এবং অন্ত্র ক্যান্সারের কোর্সগুলিতে অ্যান্টিপ্রোলিফারেটিভ প্রভাব থাকতে পারে। তবে যদি একটি ব্যক্তি ক্যান্সারে আক্রান্ত হন তবে তার চিকিৎসা করা সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
এবার আমরা জেনে নেব উটের দুধের ব্যবহার সম্পর্কে।
উটের দুধের ব্যবহার
উটের দুধকে পান করা ছাড়াও উটের দুধের চা, কফি, সস, স্যুপ, প্যানকেক, পনির, দই, মাখন ইত্যাদি তৈরিতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
উটের দুধ ব্যবহারের পরিমাণ:
একজন ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ অনুযায়ী একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ দিনে এক থেকে দেড় কাপ উটের দুধ খেতে পারেন। আর কোন সমস্যার জন্য উটের দুধ ব্যবহার করার আগে সবসময় একজন চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
উটের দুধের অপকারিতা:
- উটের দুধ কাঁচা খাওয়ার ফলে জুনোটিক সংক্রমণ সৃষ্টি হতে পারে। তাই উটের দুধ কাঁচা না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
- অতিরিক্ত মাত্রায় উটের দুধ খাওয়ার ফলে শরীরে নানা রকম সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। যেমন গ্যাস, অম্বল, বমি, পেট খারাপের মতো সমস্যা।
উপসংহার:
আজকে আমরা আমাদের এই আর্টিকেলটিতে জেনে নিলাম উটের দুধ পানের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। আশা করি আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনাদের বোঝার মত হয়েছে। যদি ভালো লাগে আর যদি আপনাদের উপকারে আসে তাহলে বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন, কমেন্টে জানান। সুস্থ থাকুন। ধন্যবাদ।