Four leaf clover : শুষনি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা।
আমাদের চারিপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বহু গাছ লতাপাতা। যেগুলোর ব্যবহার আমাদের কাছে অজানা রয়ে গেছে। সেই রকমই একটি চাক হল শুষনি শাক।শুষনি শাক আমাদের গ্রাম বাংলার এলাকায় খুবই সাধারণ একটি শাক। শুষনি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা।
যেটা বর্ষাকালে বেশি হয়। আমাদের পশ্চিমবাংলার আনাচে কানাচে পুকুরের আশেপাশে, বাগানে, নালাতে, চাষের জমিতে প্রচুর পরিমাণে শুষনি শাক জন্মায়। গ্রাম বাংলার গরীব পরিবারে খিদের চাহিদা মেটাতে এই শাক প্রচুর পরিমাণে ব্যবহৃত হয়। আজকে আমরা আমাদের এই আর্টিকেলটিতে জেনে নেব শুষনি শাকের উপকারিতা সম্পর্কে।
শুষনি শাক এর বিজ্ঞান সম্মত নাম কি?
শুষনি শাক এর বিজ্ঞান সম্মত নাম হল Marsilia Minuta।
শুষনি শাক সম্পর্কে কিছু কথা জেনে নেব।
আমাদের মধ্যে অনেকেই এমন আছে যিনি এই শুষনি শাকে চেনেন কিন্তু এর গুনাগুন সম্পর্কে জানেন না। শুষনি শাক সবুজ রং এর শখ ও ভিটামিন যুক্ত। শুষনি শাক সাধারণত গ্রামের মহিলা ও শিশুরাই সংগ্রহ করে থাকেন। গ্রামের দরিদ্র মানুষদের পরিবারের খাদ্য চাহিদা মেটায় ও পুষ্টির অভাব দূর করতে সাহায্য করে শুষনি শাক।
শুষনি শাক মাটি থেকে প্রায় দুই ইঞ্চি হয়। শুষনি শাক জলা ও স্যাঁতস্যাতে জায়গায় জন্ম হয়। এই শাকের চারটি পাতা থাকে যা গোলাপ কার হয়। তবে প্রত্যেকটি পাতা পরস্পরের থেকে আলাদা ও পাতার মাঝখানে খাঁজ কাটা থাকে। পাতার সবুজ রং ও শাকটি খুব নরম প্রকৃতির হয়। স্থানীয় লোকেদের মতে শুষনি শাক স্বাদে সামান্য মিষ্টি। শুষনি শাক একটি অপুষ্পক ফার্ণ জাতীয় উদ্ভিদ।
এবার আমরা জেনে নেব শুষনি শাকের উপকারিতা সম্পর্কে।
শুষনি শাকের উপকারিতা:
১. শুষনি শাক রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক:
শুষনি শাক আমাদের শরীরে রক্তজাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। শুষনি শাকের মধ্যে উপস্থিত বিভিন্ন রকম উপাদান আমাদের শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে থাকে।
২. শুষনি শাক অনিদ্রা দূর করতে সহায়ক:
অনেক সময় আমাদের দুশ্চিন্তার কারণে ঘুম হয় না। ঘুম ঘুম ভাব হলেও গভীর ঘুমের অভাব দেখা দিয়ে থাকে। সেই সময় যদি কাঁচা ১৫ গ্রাম শুষনি শাক বেটে অথবা শুকনো তিন চার গ্রাম শুষনি শাক গুঁড়ো তিন থেকে চার কাপ জলের সেদ্ধ করে এক কাপ করতে হবে, তারপর সন্ধ্যেবেলায় খেলে অনিদ্রা দূর হয়ে যাবে।
৩. শুষনি শাক মেধা শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক:
শুষনি শাক আমাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
৪. শুষনি শাক হাঁপানি প্রতিরোধ করে:
শুষনি শাক খাওয়ার ফলে হাঁপানি রোগ দূর হয়।
৫. শুষনি শাক প্রসবের জ্বালা দূর করে:
শুশনি শাক খাওয়ার ফলে প্রস্রাবে জ্বালা ও তার সঙ্গে কিছু ক্ষরণ হলে এর রস খুবই উপকারী হয়।
৬. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়ক শুষনি শাক:
শুষনি শাক খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য মত সমস্যা ও দূর হয়ে যায়। কারণ শুষনি শাকের মধ্যে আছে ফাইবার যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়ক।
৭. শুষনি শাক হজম শক্তি বৃদ্ধি করে:
শুষনি শাক আমাদের শরীরে হজম শক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। কারণ শুষনি শাকের মধ্যে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার যা হজম শক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে।
৮. শুষনি শাক স্কুলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক:
শুষনি শাক আমাদের শরীরে কোলেস্টরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এর ফলে হার্ট অ্যাটাক এর সমস্যাও দূরে থাকে।
৯. বিষাক্ত ক্রিকেট দংশনে শুষনি শাক উপকারী:
বিষাক্ত কিট অর্থাৎ বোলতা মৌমাছি ভিমরুল ইত্যাদি, এরা কামড়ে দিলে সেই স্থানে জ্বালাপোড়া যন্ত্রণার মতো সমস্যা সৃষ্টি হয়। তবে যদি ওই ক্ষত স্থানে শুষনি পাতা রস বা শুষনি শাক বেটে ওই স্থানে প্রলেপ দেওয়া হয়, তাহলে জ্বালা যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
১০. শুষনি শাক জন্ডিস ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের সহায়ক:
শুষনি শাক জন্ডিস ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। শুষনি শাক যৎকৃতের সমস্যায় খুবই উপকারী।
১১. শুষনি শাক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক:
শুশনি শাক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। কারণ শুষনি শাকের মধ্যে আছে প্রচুর পরিমাণে নিউট্রিয়েন্টস। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করতে সাহায্য করে।
১২. শুষনি শাক ত্বকের জন্য উপকারী:
শুষনি বয়স জনিত ত্বকের সমস্যায় খুবই উপকারী একটি উপাদান।
১৩. শুষনি শাক চুলের জন্য উপকারী:
শুষনি শাক চুল পড়ার সমস্যার সমাধান। এছাড়াও চুলের কোয়ালিটিও স্ট্রাকচার উন্নত করতেও সাহায্য করে শুষনি শাক।
শুষনি শাকের অপকারিতা:
এবার আমরা জেনে নেব শুষনি শাক হওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে।
- অতিরিক্ত মাত্রায় শুষনি শাক খাওয়ার ফলে পাতলা পায়খানা হতে পারে।
- অতিরিক্ত মাত্রায় শুষনি শাক খাওয়ার ফলে অতিরিক্ত ঘুম হতে পারে।
উপসংহার:
আজকে আমরা আমাদের এই আর্টিকেলটিতে জেনে নিলাম শুষনি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। আশা করি আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনাদের বোঝার মত হয়েছে। যদি ভালো লাগে আর যদি আপনাদের উপকারে আসে তাহলে বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন, কমেন্টে জানান। সুস্থ থাকুন। ধন্যবাদ।