Dragon fruit – ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা. Dragon fruit benefits and side effects.

Dragon fruit - ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা. Dragon fruit benefits and side effects.

Dragon fruit – ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা. Dragon fruit benefits and side effects.

শরীর সুস্থ রাখতে হলে ফল খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় তার জন্য। ফল খাওয়ার কথা বলতে গেলেই যে ফলের নামগুলো প্রথমে মনে আসে  সেগুলি হল আপেল, কমলা, কলা, বেদানা ইত্যাদি। কিন্তু গোলাপি রঙের উজ্জ্বল ড্রাগন ফল আমাদের শরীরে অনেক উপকার করে থাকে। ড্রাগন ফল সাধারণত দুই রকমের হয়। প্রথমটি হল সাদা শাশ বিশিষ্ট ড্রাগন ফল এবং অন্যটি হলো লাল শাশ বিশিষ্ট্য ড্রাগন ফল। ড্রাগন ফল ভিটামিন, খনিজ উপাদানে ভরপুর। 

ড্রাগন ফলের বিজ্ঞান সম্মত নাম কি? 

 ড্রাগন ফলের বিজ্ঞান সম্মত নামটি হল Hyloceras Undus।
এবার আমরা জেনে নেব ড্রাগন ফলের পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে।

How much does a dragon fruit plant cost near West Bengal?

Dragon fruit plant price near me BUY NOW


ড্রাগন ফলের পুষ্টি উপাদান:

  1. খাদ্যশক্তি
  2.  প্রোটিন 
  3.  কার্বোহাইড্রেট 
  4.  ফাইবার 
  5.  আয়রন
  6.  ফ্যাট 
  7.  চিনি 
  8.  ক্যালসিয়াম 
  9.  সোডিয়াম  
  10.  ফসফরাস
  11.  ভিটামিন সি
  12. ভিটামিন বি
  13. ম্যাগনেসিয়াম
  14. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট 
  15. পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড
  16. ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড 
  17. ওমেগা ৬ ফ্যাটি অ্যাসিড

পরিপোষক পদার্থ প্রতি 28 গ্রাম পরিমাণ (একটি ফল)

  • শক্তি                –     73.9 calorie
  • কার্বোহাইড্রেট        –      23 g
  • ফাইবার            –      0.504 g
  • চিনি                –      23 g
  • প্রোটিন            –     1 g
  • চর্বি                –      0 g

ভিটামিন

  • ভিটামিন সি         –          1.79 মিলিগ্রাম

খনিজ

  • ক্যালসিয়াম           –      30 মিলিগ্রাম
  • সোডিয়াম             –        10.9 মিলিগ্রাম
এবার আমরা জেনে নেব ড্রাগন ফলের উপকারিতা সম্পর্কে।

ড্রাগন ফলের উপকারিতা:

১. ড্রাগন ফল রক্তাল্পতা নিরাময় করে:

যেসব ব্যক্তির আর রক্তাল্পতায় ভুগছেন তাদের জন্য ড্রাগন ফল খুবই উপকারী একটি ফল। শরীরের মধ্যে রক্তের অভাব পূরণ করে এবং দুর্বলতা দূর করতে সাহায্য করে। কারণ ড্রাগন ফলের মধ্যে আছে বিপুল পরিমাণে আয়রন যার শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে।

২. ড্রাগন ফল হার্টের জন্য উপকারী:

ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে হার্টের স্বাস্থ্য সঠিক থাকে। কারণ ড্রাগন ফলের মধ্যে আছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ওমেগা ৬ ফ্যাটি অ্যাসিড যা হার্ট সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও ড্রাগন ফলের মধ্যে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা শরীরের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এর মধ্যে উপস্থিত আছে ম্যাগনেসিয়াম যা স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাকের মতো হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

৩. ড্রাগন ফল কোলেস্ট্রল নিয়ন্ত্রণ করে:

ড্রাগন ফল আমাদের শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। শরীরে উচ্চ মাত্রায় কোলেস্ট্রল হৃদ রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। ড্রাগন ফলের মধ্যে আছে পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, ওমাগা ৩, ওমেগা ৬ ফ্যাটি অ্যাসিড এর মত উপাদান যা শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে পারে। ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস পায় এবং ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।

৪. ড্রাগন ফল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে:

ড্রাগন ফল খাবার ফলে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হয়। কারণ ড্রাগন ফলের মধ্যে আছে বিপুল পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

৫. ড্রাগন ফল পেটের অসুখে উপকারী:

ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে পেট সংক্রান্ত রোগে উপকার মেলে। ড্রাগন ফলের মধ্যে আছে বিপুল পরিমাণে ফাইবার যা হজম শক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে।

৬. ড্রাগন ফল হাড় ও দাঁত মজবুত করে:

ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে দাঁত ও হাড় মজবুত হয়। কারণ ড্রাগন ফলের মধ্যে আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস যা হাড় ও দাঁত মজবুত করতে সাহায্য করে।

৭. ড্রাগন ফল কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে:

ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। কারণ ড্রাগন ফলের মধ্যে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। যা হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং সমস্যার সমাধান করতে পারে। তাই যেসব ব্যক্তিরা কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য ড্রাগন ফল খাওয়া খুবই উপকারী হবে।

৮. ড্রাগন ফল ত্বকের জন্য উপকারী:

ড্রাগন ফল অর্গানিক ফেস প্যাক তৈরি করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। কারণ ড্রাগন ফলের মধ্যে আছে ভিটামিন বি ৩ যা শুষ্ক ত্বকে ময়েশ্চারাইজ এবং উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। 

৯. ড্রাগন ফল মস্তিষ্কের জন্য ভালো:

ড্রাগন ফল মস্তিষ্কের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল।

১০. ড্রাগন ফল ক্যান্সারে ভালো:

ড্রাগন ফল ক্যান্সার রোগে উপকারিতা আছে। কারণ ড্রাগন ফলের মধ্যে আছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-টিউমার ও অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য। 

১১. ড্রাগন ফল জয়েন্টে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে:

ড্রাগন ফল জয়েন্টের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া ফুলে যাওয়া, নড়াচড়া করতে সমস্যা ইত্যাদি সমস্যার সমাধান করতে সাহায্য করে। কারণ ড্রাগন ফলের মধ্যে আছে ক্যালসিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা জয়েন্টের ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করে।

১২. ড্রাগন ফল হাঁপানিতে উপকারী:

যেসব ব্যক্তি হাঁপানি একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ যেটা শ্বাসকষ্টের দ্বারা চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। এর সাথে সাথে বুকে চাপ কাশি ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। এটি নানা রকম কারণে ঘটতে পারে। যেসব ব্যক্তির অ্যালার্জি আছে, নির্দিষ্ট ওষুধের সংস্পর্শে আসা, বংশগতি ইত্যাদির মধ্যে মুক্তি পেতে ড্রাগন ফল ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যাবে। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে ড্রাগন ফল ব্যবহার করার ফলে এই সমস্ত রকম সমস্যা সমাধান করতে সাহায্য করে ড্রাগন ফল।

ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম

ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময়:

ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময় হল সকালে জলখাবারে সময় অথবা সন্ধ্যাবেলায় জলখাবারের সময় ফ্রুট চাট হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

ড্রাগন ফল কিভাবে খাবেন:

  • কেটে সরাসরি ড্রাগন ফল খাওয়া যেতে পারে।
  • ড্রাগন ফল ঠান্ডাও খাওয়া যেতে পারে।
  • ড্রাগন ফল ফ্রুট চার্ট অথবা সালাদ হিসেবেও খাওয়া যেতে পারে।
  • ড্রাগন ফল জেলি তৈরি করেও খাওয়া যেতে পারে।

ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক মাপ:

ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক পরিমাণ হল একটি মাঝারি আকারের ড্রাগন ফল অর্থাৎ ৫০০ গ্রাম পর্যন্ত ড্রাগন ফল একজন ব্যক্তি একবারে বসে খেতে পারেন।

ড্রাগন ফল সংরক্ষণ:

ড্রাগন ফলকে অনেক দিন পর্যন্ত নিরাপদে রাখতে হলে ঠান্ডা জায়গায় রাখতে হবে।
৭ থেকে ১০ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং ৯০ থেকে ৯৮ শতাংশ আর্দ্রতায় রেখে প্রায় তিন মাস সংরক্ষণ করা যেতে পারে ড্রাগন ফল।
ড্রাগন ফল খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে এবার আমরা জেনে নেব। 

ড্রাগন ফল খাওয়ার অপকারিতা:

১. ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে ওজন বাড়তে পারে:

অতিরিক্ত মাত্রায় ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে ওজন বৃদ্ধি হতে পারে। কারণ ড্রাগন ফলের মধ্যে বিপুল পরিমাণে ফাইবার পাওয়া যায় যা ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এছাড়াও ড্রাগন ফলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে চিনি আছে যা ওজন বৃদ্ধি করতে পারে।

২. ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে ডায়রিয়া হতে পারে:

অতিরিক্ত মাত্রায় ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়, কিন্তু এর মধ্যে আছে মলকে নরম করার ক্ষমতা আছে যার কারণে ড্রাগন ফল বেশি খাওয়ার ফলে মল পাস করা সহজ হয়। ফলে ডায়রিয়ার সৃষ্টি হয়।

৩. ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিস বৃদ্ধি হয়:

অতিরিক্ত মাত্রায় ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিসের রোগীদের ডায়াবেটিসের মাত্রা বৃদ্ধি হতে পারে। কারণ ড্রাগন ফলের মধ্যে আছে বিপুল পরিমাণে চিনি, যা রক্তের শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে।

৪. ড্রাগন ফলে বাইরের স্তর খাওয়া উচিত নয়:

ড্রাগন ফলের বাইরের স্তর খাওয়া উচিত নয় কারণ বাইরের স্তরের মধ্যে কীটনাশক পাওয়া যায়। এই কীটনাশক আমাদের শরীরে ক্ষতি করতে পারে।

উপসংহার:

আজকে আমরা আমাদের এই আর্টিকেলটিতে জেনে নিলাম ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। আশা করি আপনাদের কাছে আমাদের এই আর্টিকেলটি বোঝার মতো হয়েছে। যদি ভালো লাগে তো বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন। আমাদের এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য ধন্যবাদ বন্ধুদের। সুস্থ থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *