Lichu – লিচু খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা।

 Lichu – লিচু খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা। লিচু একটি গ্রীষ্মকালীন ফল। লিচু খেতে সুস্বাদু এবং রসালো। লিচুর মধ্যে আছে একাধিক উপকারিতা। আমাদের শরীরে বিভিন্ন রকমের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে লিচু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ‌ লিচুর মূল উপাদান হলো জলীয় অংশ প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট খুব অল্প পরিমাণের লিচুর মধ্যে থাকে হ্যাঁ থাকে না বললেই চলে। কম ক্যালরি যুক্ত ফল, তাই লিচুর সবাই খেতে পারেন। আজকে আমরা আমাদের এই আর্টিকেলটিতে জেনে নেব লিচু সম্পর্কে বিশেষ কিছু তথ্য।

lichu

এবার আমরা জেনে নেবো লিচুর মধ্যে কি কি উপাদান আছে?

 লিচুর মধ্যে উপাদান আছে:

  • ভিটামিন সি 
  • ভিটামিন এ 
  • ম্যাঙ্গানিজ 
  • কপার 
  • ফলেট 
  • পটাশিয়াম
  • ক্যালসিয়াম 
  • আয়রন 
  • ফসফরাস
  • ফলিক অ্যাসিড  
  • ম্যাগনেসিয়াম 
  • প্রোটিন 
  • কার্বোহাইড্রেট 
  • শর্করা
  • ফ্যাট 
  • আমিষ

এবার আমরা জেনে নেব লিচুর মধ্যে কি কি উপকারিতা আছে?

 লিচুর উপকারিতা:

১. লিচু হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

লিচু আমাদের শরীরে হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। কারণ, লিচুর মধ্যে আছে বিপুল পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট। যা আমাদের শরীরে পাকস্থলীর নিচের অন্ত্রের গতিবিধিকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমসাকে প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

২. লিচু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

লিচু আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। কেননা লিচুর মধ্যে আছে ভিটামিন সি। প্রতিদিনের ১০০% এরও বেশি অ্যাসকরবিক অ্যাসিডের প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে। এই অ্যাসিডের ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হয়। এবং ফলের মধ্যে থাকা ভিটামিন সি হোয়াইট ব্লাড বা শ্বেত রক্ত কণিকা কোষের কার্যকলাপ সঠিক রাখতে সাহায্য করে। ফলে আমাদের শরীরে বহিরাগত ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে রক্ষা করে।

৩. লিচুর রক্ত সঞ্চালন সঠিক রাখতে সাহায্য করে।

লিচু আমাদের শরীরের রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়াকে সঠিক রাখতে সাহায্য করে। কেননা লিচুর মধ্যে আছে কপারের মতো উপাদান। যা সারা শরীরের রক্ত সঞ্চালন বাড়ানোর জন্য খুব ভালো কাজ করে। কপার জাতীয় ওষুধ রক্তকণিকায় রেড ব্লাড সেল গঠনে সাহায্য করে। অক্সিজেন বহন করে এবং তার সঙ্গে এর মাত্রা বৃদ্ধিতে হয়, শরীরে বিভিন্ন অংশ অক্সিজেন প্রবাহ বজায় থাকে।

৪. লিচু রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ সাহায্য করে।

লিচু শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। সারা শরীর জুড়ে তরল প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। পটাশিয়ামে ভরপুর লিচুর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করে।

৫. লিচু ওজন কমাতে সাহায্য করে।

লিচুর মধ্যে আছে বিপুল পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। লিচুর মধ্যে আছে বেশি পরিমাণে জল এবং লোক্যালোরি ফলে এটি ওজন কমানোর জন্য একটি আদর্শ খাবার।

৬. হাড় শক্ত করতে সাহায্য করে লিচু।

লিচু আমাদের শরীরে হাড় শক্ত করতে সাহায্য করে‌। কেননা লিচুর মধ্যে আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, কপার যা হাড় শক্ত করতে বিশেষ ভাবে সাহায্য করে।

৭. লিচু ত্বকের জন্য খুবই উপকারী।

লিচু ত্বকের দাগ কমাতে সাহায্য করে। কারণ লিচুর মধ্যে আছে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকার ফলে পরিষ্কার এবং স্বাস্থ্যকর রাখতে সাহায্য করে।

৮. লিচু ক্যান্সার প্রতিরোধের সাহায্য করে।

সবথেকে বড় গুণ হলো, এটি ক্যান্সার প্রতিরোধে বিশেষভাবে সাহায্য করে। কারণ নিচের মধ্যে আছে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরে ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

এবার আমরা জেনে নেব লিচুর অপকারিতা সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য।

 লিচুর অপকারিতা:

১. খালি পেটে লিচু খাওয়া উচিত নয়।

খালি পেটে লিচু খাওয়া উচিত নয়। খালি পেটে লিচু খেলে একটি ভয়াবহ পরিনামে ভুগতে হতে পারে। তাই খালি পেটে কখনোই উচিত নয়।

২. অতিরিক্ত লিচু খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায়।

অতিরিক্ত পরিমাণে লিচু খেলে রক্তের মধ্যে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায়।

৩. অতিরিক্ত লিচু খেলে রক্তচাপ কমে যায়।

অতিরিক্ত পরিমাণে লিচু খেলে রক্তের চাপ অস্বাভাবিক মাত্রায় কমে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। শ্বাসকষ্ট, বমি, বুক ধর ফর, মাথা ঘোরা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেবে।

৪. অতিরিক্ত লিচু খেলে দেহে তাপমাত্রা ব্যালেন্স কমে যায়।

অতিরিক্ত মাত্রায় লিচু খেলে দেহে তাপমাত্রা ব্যালেন্স কমে যায় ফলে আমাদের গলা ব্যথা, মুখের ভিতর ক্ষত নাক দিয়ে রক্ত পড়ার মতো সমস্যা হতে পারে।

৫. সার্জারি রোগীদের বেশি লিচু খাওয়া ঝুঁকি পূর্ণ।

যদি কোন প্রয়োজনে সার্জারি করতে হয় তাহলে তারা সার্জারির আগে পরে অন্তত দুই সপ্তাহ লিচু খাবেন না।

৬. যাদের ডায়াবেটিসটা আছে তারা লিচু এড়িয়ে চলবেন।

যেসব ব্যক্তি ডায়াবেটিস্ট নিয়ন্ত্রণের ওষুধ খান, তারা লিচু খাওয়ার সময় কিছুটা সাবধান হওয়াই ভালো। কারণ ওষুধ গ্লুকোজ কমাতে সাহায্য করে। যেহেতু ওষুধের পাশাপাশি আবার যদি বেশি মাত্রায় লিচু খাওয়া হয় তাহলে বিপদ ঘটতে পারে।

৭. অতিরিক্ত লিচু খেলে ওজন বৃদ্ধি হবে।

অতিরিক্ত লিচু খেলে আপনার ওজন বৃদ্ধি হতে পারে। কারন লিচুর মধ্যে আছে ক্যালরি, যা অনেক বেশি পরিমাণে আছে।

লিচু সম্পর্কে অন্যান্য কিছু প্রশ্ন এবং তার উত্তর:

ডায়াবেটিসের রোগীদের কি লিচু খাওয়া উচিত?

ডাইবেটিসের রোগীদের লিচু খাওয়া উচিত নয়। কারণ লিচু রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কম করতে সাহায্য করে। আর ডায়াবেটিসের রোগীরা নিশ্চয়ই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণকারী ওষুধ খান। তাই তাদের লিচু থেকে এড়িয়ে চলাই ভালো।

লিচু কোন সময় হয়?

লিচু একটি গ্রীষ্মকালীন, রসালো ফল।

বাচ্চাদের কি লিচু খাওয়া উচিত?

বাচ্চাদের লিচু খাওয়া উচিত নয়।

লিচু খেতে কেমন?

লিচু একটি গ্রীষ্মকালীন ফল। লিচু খেতে খুবই সুস্বাদু, রসালো এবং মিষ্টি।

বেশি লিচু খেলে কি রক্তে গ্লুকোজ কমে যায়?

হ্যাঁ, অতিরিক্ত মাত্রায় লিচু খেলে রক্তের মধ্যে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যেতে পারে।

Juice shop near me

উপসংহার:

আজকে আমাদের এই আর্টিকেলে আমরা জেনে নিলাম লিচু খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা গুলি সম্পর্কে বিশেষ কিছু তথ্য। Lichu – লিচু খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা। আশা করি আপনাদের কাছে আমাদের এই আর্টিকেলটি বোধগম্য হয়েছে এবং ভালো লেগেছে। সব জিনিসেরই যেমন ভালো দিক আছে ঠিক সেরকম খারাপ দিকও আছে। তাই লিচুরও যেমন একটি ভাল দিক আছে ঠিক তেমনি লিচু রোগ খারাপ দিক আছে। যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্টে জানান। ধন্যবাদ বন্ধুরা আপনাদের সকলকে আমাদের এই আর্টিকেলটিকে কষ্ট করে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য। সুস্থ থাকুন, ধন্যবাদ।

One comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *