কমলালেবুর জুস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা। টক-মিষ্টি রসে ভরা কমলা লেবু খেতে আমরা কেনা পছন্দ করি। আর অরেঞ্জ জুস অথবা কমলার রস তো আরো পছন্দের। তো আজকে আমরা আমাদের এই আর্টিকেলটিতে জেনে নেব কমলালেবুর জুস অর্থাৎ অরেঞ্জ জুস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।
Also read : কমলালেবু খেলে কি উপকার হয়। কমলা লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা।
প্রতি ১০০ গ্রাম কমলালেবুর রসের পুষ্টিগুণ:
নাম | পরিমাণ |
---|---|
জল | ৮৬.৭৫ গ্রাম |
খাদ্যশক্তি | ৪৭ ক্যালোরি |
কার্বোহাইড্রেট | ১১.৭৫ গ্রাম |
চর্বি | ০.১৫ গ্রাম |
প্রোটিন | ০.৯৪ গ্রাম |
ফাইবার | ২.৪ গ্রাম |
চিনি | ৯.৩৫ গ্রাম |
ফোল্ট | ৩০ মাইক্রগ্রাম |
নিয়াসিন | ০.২৮২ মিলিগ্রাম |
রিবোফ্লাভিন | ০.০৪ মিলিগ্রাম |
থায়ামিন | ০.০৮৭ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন সি | ৫৩.২ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন এ | ১১ মাইক্রগ্রাম |
ভিটামিন ই | ০.১৮ মিলিগ্রাম |
পটাসিয়াম | ১৮১ মিলিগ্রাম |
ক্যালসিয়াম | ৪০ মিলিগ্রাম |
আয়রন | ০.১ মিলিগ্রাম |
ম্যাগনেসিয়াম | ১০ মিলিগ্রাম |
ফসফরাস | ১৪ মিলিগ্রাম |
দস্তা | ০.০৭ মিলিগ্রাম |
ফ্যাটি অ্যাসিড | ০.০১৫ গ্রাম |
মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড | ০.০২৩ গ্রাম |
পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড | ০.০২৫ গ্রাম |
কমলালেবুর রসের উপকারিতা:
![]() |
কমলালেবুর রসের উপকারিতা
|
১. অরেঞ্জ জুস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে:
অরেঞ্জ জুস আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। কারণ এর মধ্যে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া ভাইরাসের থেকে রক্ষা করে।
২. অরেঞ্জ জুস কিডনির জন্য উপকারী:
অরেঞ্জ জুস কিডনির জন্য খুবই উপকারী। কিডনিতে পাথরের জন্য উপকারী অরেঞ্জ জুস। অরেঞ্জ জুসের মধ্যে আছে সাইট্রিক অ্যাসিড, যা ক্রিস্টাল তৈরি হতে বাধা সৃষ্টি করে। প্রত্যেকদিন নিয়মিত এক গ্লাস অরেঞ্জ জুস খাওয়ার ফলে কিডনি পাথরের ঝুঁকিয়ে অনেকটা এড়ানো যায়।
৩. অরেঞ্জ জুস রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক:
অরেঞ্জু রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। কারণ এর মধ্যে আছে ফ্ল্যাভোনয়েড এবং পেকটিনের মত প্রয়োজনীয় উপাদান। এছাড়াও লেবুর রসের মধ্যে আছে পটাশিয়াম জের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ সহায়ক।
৪. অরেঞ্জ জুস চোখ সুস্থ রাখে:
অরেঞ্জ জুস চোখের জন্য খুবই উপকারী। কারণ এর মধ্যে আছে ভিটামিন সি। আর ভিটামিন সি চোখ সুস্থ রাখার সাথে সাথে চোখে ছানি সৃষ্টি হওয়া রোধ করে।
৫. কমলার রস হার্ট সুস্থ রাখে:
অরেঞ্জ জুস অর্থাৎ কমলার রস হার্ট সুস্থ রাখতে সাহায্য করে কারণ অরেঞ্জ জুসের মধ্যে আছে পটাশিয়াম, ভিটামিন সি জাহিদ রোগের জন্য খুবই উপকারী।
৬. অরেঞ্জ জুস ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে:
অরেঞ্জ জুস আমাদের শরীরে ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কারণ এর মধ্যে আছে ফাইবার, যা ফ্যাট কমাতে সব চেয়ে বড়ো ভূমিকা।
৭. লেবুর রস কোলেস্টেরলের জন্য উপকারী:
অরেঞ্জ জুস কোলেস্টেরল কমাতে সহায়ক। কারণ অরেঞ্জ জুসের মধ্যে আছে ফাইবার এছাড়াও আছে ভিটামিন সি পটাশিয়াম ফ্ল্যাভোনয়েড যা কোলেস্টেরল কমাতে সহায়ক বলে মনে করা হয়।
৮. অরেঞ্জ জুস ক্যান্সার প্রতিরোধের সহায়ক:
অরেঞ্জ জুসের মধ্যে আছে ফাইবার। যা কোলন ক্যান্সারে বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
৯. অরেঞ্জ জুস হজম শক্তি বৃদ্ধি করে:
অরেঞ্জ জুস আমাদের শরীরে হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। কারণ এর মধ্যে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার যা পাচনতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
১০. অরেঞ্জ জুস কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে:
অরেঞ্জ জুস কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। কারণ এর মধ্যে আছে ফাইবার যা মল নরম করে মলত্যাগের প্রক্রিয়াকে সহজ করতে সাহায্য করে।
১১. অরেঞ্জ জুস রক্তশূন্যতা দূর করে:
অরেঞ্জ জুস রক্তল্পতা অর্থাৎ রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে। কারণ অরেঞ্জ জুসের মধ্যে আছে বিপুল পরিমাণে আয়রন এবং ভিটামিন সি।
১২. অরেঞ্জ জুস ত্বকের জন্য উপকারী:
অরেঞ্জ জুস ত্বক সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। কারণ অরেঞ্জ জুসের মধ্যে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি। যেটা অ্যান্টি-এজিং এবং ইউভি সুরক্ষা পাশাপাশি ত্বক সুস্থ রাখতে পারে।
১৩. অরেঞ্জ জুস ডায়াবেটিস প্রতিরোধে উপকারী:
অরেঞ্জ জুস ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়ক। কারণ এর মধ্যে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে ফাইবার দ্রুত রক্তের শর্করা এবং গ্লাইকোসিলেটেড হিমোগ্লোবিন কমাতে সহায়ক যা টাইপ টু ডায়াবেটিস বৃদ্ধির প্রধান কারণ।
অরেঞ্জ জুস বানানোর পদ্ধতি:
এখন বাড়িতেই অরেঞ্জ জুস অর্থাৎ কমলার রস তৈরি করা খুবই সহজ।
উপাদান :
- পাঁচটি খোসা ছাড়ানো কমলা
- একটি ছাঁকনি
পদ্ধতি:
- প্রথমে খোসা ছাড়ানো কমলাগুলো জুসারে রেখে পিষে নিতে হবে।
- তারপর ছাঁকনি দিয়ে ফিল্টার করে একটি পাত্রে বের করে নিতে হবে।
- তারপর স্বাদের জন্য কালো লবণও যোগ করতে পারেন।
- তারপরে কমলার রস পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত হবে।
অরেঞ্জ জুস অর্থাৎ কমলার রসের অপকারিতা:
- অতিরিক্ত মাত্রায় রস অর্থাৎ অরেঞ্জ জুস খাওয়ার ফলে বদ হজম, গ্যাস, পেট ফাঁপা, এমনকি ডায়রিয়া সৃষ্টি হতে পারে।
- কমলা অম্ল তাই অরেঞ্জ জুস বেশি মাত্রায় খাওয়ার ফলে অম্বল হতে পারে।
- খালি পেটে অরেঞ্জ জুস খাওয়ার ফলে পাকস্থলী ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
ফরেন জুস সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন এবং তার উত্তর:
কমলালেবুর রস খেলে শরীরে কি হয়?
কমলালেবুর রস খেলে শরীরের জলে ঘাটতি পূরণ হয়।
কেন সকালে কমলার রস পান করা উচিত নয়?
সকালে কমলার রস খেলে পেটে জ্বালা হতে পারে, কারণ কমলার রস অ্যাসিড পরিমাণ বাড়ায়।
কার কমলার রস পান করা উচিত নয়?
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের কমলার রস অতিরিক্ত পান না করাই উচিত।
আমি কি প্রত্যেকদিন কমলার রস পান করতে পারি?
পরিমিত ভাবে কমলার রস খাওয়া ভালো।
দিনে কত কমলার রস পান করা উচিত?
প্রতিদিন ২৪০ মিলি কমলার রস পান করা উচিত।
খালি পেটে কমলার রস পান করা কি ক্ষতিকারক?
খালি পেটে অরেঞ্জ জুস খাওয়ার ফলে পাকস্থলীর ক্ষতি হতে পারে।